মতিউর রহমান মাদানীর পোস্টমটের্ম : দেওবন্দী আকিদা নামে মতির মিথ্যাচার (পর্ব- ৩)


ওয়াহদাতুল উজুদ সম্পর্কে দেওবন্দী আলেমদের অবস্থান: স্রষ্টা ও সৃষ্টি কখনও এক নয়

==========================================================

পূর্বের পর্বে ওযাহদাতুল উজুদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। দেওবন্দী আলেমদের ব্যাপারে মাদানী কতটা বিদ্বেষ পরায়ণ তা তার মিথ্যচার থেকে স্পষ্ট হয়েছে। সে তার লেকচারে বার বার উল্লেখ করেছে যে, দেওবন্দী আলেমদের নিকট নাউযুবিল্লাহ স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক। আর এই মিথ্যাচারের মাধ্যমেই সে দেওবন্দী আলেমদের আকিদাকে কুফুরী শিরকী আখ্যায়িত করেছে। রাসূল স. এর স্পষ্ট হাদীস রয়েছে, কেউ যদি কোন মুসলমানকে কুফুরীর অপবাদ দেয়, আর উক্ত মুসলমানের মধ্যে সেই কুফুরী না থাকে তাহলে ঐ কুফুরী তার দিকে ফিরে আসে। প্রিয় পাঠক, একটু ইনসাফের সাথে বিবেচনা করুন। রাসূল স. এর এই হাদীস অনুযায়ী কুফুরীতে কে নিপতিত হলো?

 

 

কাউকে কুফুরী শিরকের অপবাদ দেয়া কতটা জঘন্য তা নীচের হাদীস ও ইমামগণের বক্তব্য থেকে লক্ষ্য করুন,

 

হাদীসে রাসূল সাঃ যে ব্যক্তি কাফের না তাকে কাফের বললে, সেই কুফরী নিজের দিকে প্রত্যাবর্তন করে মর্মে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন-

لا يرمي رجل رجلاً بالفسوق، ولا يرميه بالكفر، إلا ارتدت عليه، إن لم يكن صاحبه كذلك

হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে।

{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮}

 

রাসূল স. আরও বলেছেন,

إذا قال الرجل لأخيه: يا كافر، فقد باء بها أحدهما

যখন কোন মুসলমান তার মুসলিম ভাইকে বললো হে কাফের, তবে তাদের মধ্যে যে কোন একজন কাফের হয়ে যাবে।[সহীহ বোখারী, হাদীস নং ৬১০৩]

নবীজী স. কোন মুসলমানকে কাফের বলাকে তাকে ইচ্ছাকৃত হত্যার সমতুল্য বলেছেন। কোন মুসলমানকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করা শিরকের পরে সবচেয়ে বড় গোনাহ। রাসূল স. বলেছেন,

ومن قذف مؤمناً بكفر فهو كقتله

কোন মু’মিনকে কাফের হওয়ার অপবাদ দেয়া তাকে হত্যার সমতুল্য।

(বোখারী শরীফ, হাদীস নং ৬০৪৭)

এ ব্যাপারে আরও অনেক হাদীস রয়েছে। একজন মুসলমানকে কাফের বলা কত ভয়ঙ্কর এসব হাদিস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়।

 

তাকফিরের ব্যাপারে আলেমদের বক্তব্য:

 

১.আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-

 

কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। [শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯]

২. আল্লামা ইবনে নুজাইম রহ. আল-বাহরুর রায়েকে লিখেছেন,

إذا كان في المسالة وجوه توجب التكفير، ووجه واحد يمنع التكفير، فعلى المفتي أن يميل إلى الوجه الذي يمنع التكفير

অর্থাৎ কারও মাঝে যদি কাফের হওয়ার অনেকগুলো কারণ পাওয়া যায়, আর কাফের না হওয়ার মাত্র একটি কারণ পাওয়া যায়, তবে মুফতি কাফের না হওয়ার একটি কারণকে প্রাধান্য দিবে এবং কাফের না হওয়ার ফতোয়া দিবে। [আল-বাহরুর রায়েক, খ.৫, পৃ.১৩৪]

৩. কাযি শাওকানী রহ. বলেন,

اعلم أن الحكم على الرجل المسلم بخروجه من دين الإسلام ودخوله في الكفر لا ينبغي لمسلم يؤمن بالله واليوم الآخر أن يُقدم عليه إلا ببرهان أوضح من شمس النهار

অর্থাৎ কোন মুসলমান ইসলাম থেকে বের হয়ে কাফের হওয়ার ব্যাপারে ফয়সালা দিবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার কুফুরীটা দিনের সূর্য থেকেও স্পষ্ট হবে না হবে।

[আস সাইলুল জিরার, খ.৪, পৃ.৫৭৮]

অর্থাৎ সূর্যের আলোর চেয়ে কুফুরীটা স্পষ্ট হলে কেবল তাকে কাফের বলা যাবে। নতুবা কাউকে কাফের বলার দু:সাহস দেখাবে না।

৪. ইমাম বাকিল্লানি রহ. বলেন,

ولا يكفر بقول ولا رأي إلا إذا أجمع المسلمون على أنه لايوجد إلا من كافر، ويقوم دليل على ذلك، فيكفر

কারও মতামত বা বক্তব্যের আলোকে কাউকে কাফের বলা যাবে না। তবে মুসলমানরা যে বিষয়ের একমত হয়েছেন এটি কুফুরী ছাড়া কিছুই নয় এবং কুফুরীর সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়, কেবল তখনই কাউকে কাফের বলা যাবে। [ফাতাওয়াস সুবকি, খ.২, পৃ.৫৭৮]

 

 

এবার দেওবন্দী আকিদা নামে মতিউর রহমান মাদানী কীভাবে বড় বড় আলেম ও বুজুর্গদেরকে কুফুরী শিরকের অপবাদ দিয়েছে দেখুন,

 

“”প্রথম আকিদা যে আকিদা যে আকিদাটি ইসলামী আকিদা নয়, যে আকিদা শুধু বিদয়াতী আকিদা নয়, বরং কুফুরী, বিদয়াতী আকিদা। এই আকিদা মওজুদ রয়েছে, বিদ্যমান রয়েছে দেওবন্দীদের মধ্যে; সেই আকিদা হচ্ছে ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদা। আরবীতে তাকে বলা হয়, ওয়াহদাতুল উজুদ। ওয়াহদা ওয়াহিদ থেকে। এক হয়ে যাওয়া। উজুদ মানে হচ্ছে অসিত্ব। পৃথিবীতে যা কিছু আছে আসমান-জমিন, আরশ কুরসী, আল্লাহ পাক, খালেক মাখলুক, আল্লাহর সৃষ্টিজগত, সৃষ্টিজগতের মধ্যে আবার আ্যা….যাদের জীবন আছে যেমন মানুষ জীন, পশু-প্রাণি, যতো রকমের হাইয়ান রয়েছে, জীবজন্তু রয়েছে, পাখি রয়েছে, ইত্যাদি, সমস্ত কিছু , এগুলো হচ্ছে অস্তিত্ব-উজুদ। সমস্ত সৃষ্টি ও স্রষ্টার অস্তিত্ব হচ্ছে, শুধু সৃষ্টির অস্তিত্ব নয়, সমস্ত সৃষ্টি ও স্রষ্টা আল্লাহর অস্তিত্ব হচ্ছে ওয়াহদা এক। এ হচ্ছে ওয়াহদাতুল উজুদের শাব্দিক অর্থ করলাম, আর এটি হচ্ছে তার ডিটেইলস বা বিস্তারিত। যা সংক্ষেপে আপনাদেরকে বোঝানোর জন্য বললাম। ওয়াহদাতুল উজদু মানে খালেক আর মাখলুকের অস্তিত্ব আলাদা আলাদা পৃথক পৃথক নয়, আল্লাহ এবং মাখলুক সৃষ্টিজগতের অস্তিত্ব আলাদা আলাদা পৃথক পৃথক নয়, বরং সব কিছুই হচ্ছে এক। সব কিছুই এক। অর্থাৎ যে কোন বস্তু দেখছেন, যে কোন মানুষকে দেখছেন, যে কো প্রাণীকে দেখছেন, তাতেই আল্লাহ আছে।  এ হচ্ছে ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদা। ওয়াহদাতুল উজুদের আকিদায় এসে বেরলবী দেওবন্দী সবাই এসে এক সঙ্গমে সাক্ষাৎ করেছে। মিলে গেছে এসে। বোঝেন তো সঙ্গম? নাহ? দু’টো রাস্তা এসে এক জায়গায় এসে মিলে গেলো। দুইটি ফেরকা তো বেরিয়ে গেছে কিন্তু এখানে এসে এরা মিলে গেছে। বেরেলভীরাও বলে, ওয়াহদাতুল উজুদের প্রতি তাদের ইমান রয়েছে, আর দেওবন্দীদের কিতাবাদীতে ভরপুর রয়েছে, ওয়াহদাতুল উজুদ।””

 

 

আমরা আল্লহার কাছে এধরনের মিথ্যুক অপবাদ দাতা খান্নাস থেকে আশ্রয় চাই। কারণ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সুরা নাসে এধরনের খান্নাস থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

আমরা এ পর্বে  স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক নয় এ বিষয়ে ওবন্দী আলেমদগণের সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরবো।

 

 

স্রষ্টা ও সৃষ্টি কখনও এক নয়:

===============

 

১. আশরাফ আলী থানবী রহ. এর বক্তব্য:

 

আশরাফ থানবী রহ. তার বাওয়াদিরুন নাওয়াদির কিতাবে লিখেছেন,

 

” ওয়াহদাতুল উজুদের ব্যাখ্যার সাথে হুলুল (স্রষ্টার প্রবেশবাদ) ও ইত্তেহাদ ( স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক হওয়া) এর কোন সম্পর্ক নেই।  তারা শুধু আল্লাহর একক ও স্বাধীন অস্তিত্বের কথা বলে। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কারও স্বাধীন অস্তিত্ব নেই। শুধু ধারণাগত অস্তিত্ব রয়েছে। ওয়াহদাতুল উজুদের ব্যাখ্যাকারগণ ইত্তেহাদের প্রবক্তা নন যে, মহাবিশ্ব আল্লাহর অস্তিত্বের সাথে একীভূত হয়ে বিদ্যমান রয়েছে। তাদের বক্তব্য হুলুল থেকেও মুক্ত। কেননা হুলুলের ক্ষেত্রে যেটি প্রবেশ করছে এবং যার মধ্যে প্রবেশ করছে, দু’টোই বিদ্যমান থাকে, এরপর তাদের মাঝে একধরনের মিশ্রণ সৃষ্টি হয়।”

[বাওয়াদিরুন নাওয়াদির, পৃ.৬৪৮]

 

থানবী রহ. এর এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে দেওবন্দী উলামায়ে কেরাম হুলুল ও ইত্তেহাদের আকিদা রাখে না।

 

মূল বইযের ডাউনলোড লিংক:

https://ia600406.us.archive.org/14/items/Bawadir-un-nawadirByShaykhAshrafAliThanvir.a/Bawadir-un-nawadirByShaykhAshrafAliThanvir.a.pdf

 

 

মূল বইয়ের স্ক্রিনশট:

 

 

 

২. আশরাফ আলী থানবী রহ. মনসুর হাল্লাজের আকিদা-বিশ্বাস ও তার জীবনী সম্পর্কে প্রচলিত অনেক মিথ্যা ও বানোয়াট বর্ণনার চুল-চেরা বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি এই  কিতাবের নাম দিয়েছেন, আল-কাউলুল মানসুর ফি ইবনিল মানসুর।

এই কিতাবে থানবী রহ. স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, আমাদের আকিদা বিশ্বাস হুলুল ও ইত্তেহাদ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। তিনি এই কিতাবে একটা পুস্তিকার শিরোনাম দিয়েছেন, ত্বরিকুস সাদাদ ফি ইসবাতিল ওয়াহদাতি ও নাফইল ইত্তেহাদ অর্থাৎ ওয়াহদাতুল উজুদ ও স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক নয়, এ বিষয়ে সঠিক পথ”

আশরাফ আলী থানবী রহ. লিখেছেন,

 

” মনসুর হাল্লাজের তাউহীদ বিষয়ক আকিদা:

অনেকেই মনসুর হাল্লাজের এমন কিছু কথার কারণে ধোকায় নিপতিত হয়েছে, যা তার ভ্রমগ্রস্ত অবস্থা বা অধিক মহব্বতের অবস্থায় প্রকাশিত হয়েছে। তার সেসব কথার দিকে ভ্রুক্ষেপ করা হয়নি যেগুলো সে তার সুস্পষ্ট আকিদা বর্ণনার জন্য বলেছে। ইবনে মানসুরের বক্তব্য সংকলন অধ্যাযে আমরা সর্ব প্রথম মনসুর হাল্লাজের এধরনের সুস্পষ্ট তাউহীদ বিষয়ক বক্তব্য উল্লেখ করেছি। সেসব বক্তব্য  থেকে দিবালোকের ন্যায় স্পস্ট যে, মনসুর হাল্লাজ পরিপূর্ণ তাউহীদে বিশ্বাসী এবং তাউহীদের বিষয়ে একজন গবেষক ছিলেন। মনসুর হাল্লাজ স্পষ্ট বলেছেন,

 

[আরবীর অনুবাদ] ” আল্লাহ তায়ালা ক্বাদীম বা অনাদির গুণের মাধ্যমে সমস্ত সৃষ্টি থেকে পৃথক হয়েছেন, তেমনি সমস্ত সৃষ্টি নশ্বর গুণের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা থেকে পৃথক হয়েছে ”

 

এখানে তিনি দ্ব্যর্থহীন  ভাষায় বলেছেন যে, আল্লাহ তায়ালা মাখলুকের সাথে ইত্তেহাদ বা একীভূত নন, তেমনি তিনি সৃষ্টির মাঝেও প্রবেশ করেন না। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা হুলুল ও ইত্তেহাদ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।

এরপর মনসুর হাল্লাজ বলেন,

[আরবীর অনুবাদ] ” আল্লাহর পরিচয় লাভ করা হলো তাউহীদ। আর আল্লাহর তাউহীদ হলো আল্লাহ তায়ালাকে সৃষ্টি থেকে পৃথক বিশ্বাস করা। ”

 

সুতরাং যারা সূফীদেরকে অথবা তাদের মধ্যে মনসুর হাল্লাজ সম্পর্কে এই বলে দুর্নাম করার চেষ্টা করে যে, তারা স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে এক কিংবা স্রস্টা সৃষ্টির মাঝে প্রবেশ করেছেন এধরনের আকিদার রাখে; এটি তাদের উপর সুষ্পষ্ট মিথ্যা অপবাদ ”

[সিরাতে মনসুর হাল্লাজ, পৃ.২২]

 

আশরাফ আলী থানবী রহ. এর বক্তব্য থেকে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো, দেওবন্দী আলেমরা হুলুল ও ইত্তেহাদ তথা স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক, এধরনের আকিদা কোন আকিদা কখনও রাখে না। অথচ মিথ্যুক মতি কতো জঘন্যভাবে দেওবন্দী আলেমদেরকে অপবাদ দিয়েছে।

 

মূল বইয়ের ডাউনলোড লিংক:

https://ia600800.us.archive.org/24/items/Seerat-e-MansoorHallajShaykhZafarAhmadUsmanir.a/Seerat-e-MansoorHallajShaykhZafarAhmadUsmanir.a.pdf

 

মূল বইয়ের স্ক্রিনশট:

 

 

 

3. হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত আশরাফ আলী থানবী রহ. তার শরীয়ত ও ত্বরীকত বইয়ে লিখেছেন,

 

“একইভাবে এক্ষেত্রে বুঝে নেয়া দরকার যে, ওয়াহদাতুল উজুদ বা হামা উস্ত (সব কিছুই তিনি) এর দ্বারা কখনও এটি উদ্দেশ্য নয় যে, আল্লাহ ও সৃষ্টি সব এক। বরং উদ্দেশ্য হলো, সৃষ্টির অস্তিত্ব গননায় আনার মতো কিছুই নয়। বরং একমাত্র আল্লাহর অস্তিত্বই ধর্তব্য। আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর যতো সৃষ্টি রয়েছে, তাদেরও অস্তিত্ব রয়েছে, কিন্তু সৃষ্টির কারও অস্তিত্ব স্বাধীন ও পরিপূর্ণ অস্তিত্বের তুলনায় কেমন যেন কোন অস্তিত্বই নেই। যাকে বাহ্য অস্তিত্ব বলে উল্লেখ করা হযেছে।

বিষয়টির বিস্তারিত ব্যাখ্যা হলো, প্রত্যেকটি গুণের দু’টি স্তর রয়েছে। ১. পরিপূর্ণ ও ২. অপূর্ণ। আর স্বীকৃত নিয়ম হলো, পরিপূর্ণ গুণের তুলনায় অপূর্ণ গুণটিকে কেমন যেন অস্তিত্বহীন ধরা হয়।  এর দৃষ্টান্ত হলো, একজন নিম্ন পর্যায়ের বিচারক তার আদালতে নিজের ক্ষমতা জাহির করছিলো। এই পদে থেকে সে সাধারণ কোন প্রজাকে কোন মূল্য দেয় না। হঠাৎ দেশের বাদশাহ ঐ আদালতে এসে উপস্থিত হলো। বাদশাহকে দেখেই সে দিশেহারা হয়ে গেলো। নিজের সব অহংকার, আত্মগরিমা ও বড়ত্বের দাবী সব কিছু মুহূর্তেই হাওয়া হয়ে গেলো। সুতরাং একজন সাধারণ বিচারক যখন নিজের পদকে বাদশাহর পদের সাথে তুলনা করে, তখন নিজের পদের কোন অস্তিত্বই খুজে পায় না। মাথা নীচু করে দাড়িয়ে থাকে। মুখ থেকে আওয়াজ বের হয় না, মাথা তুলে তাকাতেও পারে না। এই সময় যদিও তার পদ একেবারে অস্তিত্বহীন নয়, তবে তা গননায় আনার মতোও কিছু নয়।””

[শরীয়ত ও ত্বরীকত, পৃ.৩১০]

 

মূল বইয়ের ডাউনলোড লিংক:

 

http://ia600807.us.archive.org/26/items/Shariat-o-TareeqatByShaykhAshrafAliThanvir.aCollectedByShaykh/Shariat-o-TareeqatByShaykhAshrafAliThanvir.aCollectedByShaykhMuhammadDeen.pdf

 

মূল বইযের স্ক্রিনশট:

 

 

 

পরবর্তী পর্বে স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক নয় বা দেওবন্দী আলেমরা যে হুলুল ও ইত্তেহাদ থেকে মুক্ত,  এ বিষয়ে মাওলানা রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী রহ.এর বক্তব্য উল্লেখ করবো। থানবী রহ. এর দ্ব্যর্থহীন আলোচনা থেকে পাঠক নিশ্চয় বুঝেছেন, মাদানী কতো বড় দাজ্জাল ও কাজ্জাব এবং সে কাদেরে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এভাবে মিথ্যাচারর মাধ্যমে যদি বড় বড় আলেম থেকে সাধারণ মানুষকে বীতশ্রদ্ধ করা যায়, তাহলে এদেরকে সহজেই পথভ্রষ্ট করতে পারবে। আল্লাহ পাক আখেরী জামানার এসব দাজ্জাল থেকে উম্মাহকে হেফাজত করুন।

One thought on “মতিউর রহমান মাদানীর পোস্টমটের্ম : দেওবন্দী আকিদা নামে মতির মিথ্যাচার (পর্ব- ৩)

  1. আল্লাহ আপনাদের যাজায়ে খায়ের দান করুন।

Leave a comment